পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র রয়েছে। একজন প্রধানমন্ত্রীর যতটুকু ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন, ঠিক ততটুকুই আছে। এটার মাত্রা নিয়ে কোনো বন্ধু রাষ্ট্রের উদ্বেগ, সংশয় বা প্রশ্ন উত্থাপন করার নৈতিক অধিকার নেই। তিনি বলেন, অনিবন্ধিত সংগঠন থেকে তথ্য নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি বেআইনি কাজ। আমি যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য বন্ধু রাষ্ট্রগুলোকে এটা থেকে দূরে থাকার অনুরোধ জানাব।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর হাতে কেন্দ্রীভূত – মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনের এই অভিমত সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী উপরোক্ত মন্তব্য করেন। গতকাল সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি আরো বলেন, এই প্রতিবেদনগুলোর মৌলিক কিছু ঘাটতি রয়েছে। প্রথমত, বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে আমরা বলি প্রতিবেদনগুলোর প্রকাশ করার আগে আমাদের যাতে জানানো হয় এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় এ ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু বরাবরের মতোই এবারো সেই প্রতিশ্রুতি রাখা হয়নি।
দ্বিতীয়ত, প্রতিবেদনে ওপেন সোর্স থেকে তথ্যগুলো নেয়া হয়। এতে স্ববিরোধিতা থাকে। অনেক সময় বলা হয়, মিডিয়া বা বাকস্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদনে ওপেন সোর্স ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এতে প্রমাণ হয়, গণমাধ্যমকে সংবাদ প্রকাশে সরকার কোনো বাধা দেয় না। তৃতীয়ত, প্রতিবেদনে বেশ কিছু এনজিও এবং আইএনজিওর রেফারেন্স দেয়া হয়েছে। এর অন্যতম হলো এনজিও সংস্থা অধিকার। পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, বাংলাদেশে কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য অধিকারকে কোনো লাইসেন্স দেয়া হয়নি। তাদের লাইসেন্স নবায়নের আবেদন বাতিল করা হয়েছে। আপিলেও তা খারিজ হয়েছে। কোনো নাগরিক সমাজ সম্পৃক্ত সংগঠন বা এনজিওর রাজনৈতিক ইতিহাস থাকলে তাদের নিরপেক্ষতার দৃষ্টিকোনো থেকে দেখার সুযোগ নেই। এ ধরনের ঘাটতি অব্যাহতভাবে থাকলে মানবাধিকার বা অন্য কোনো প্রতিবেদনগুলোর গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে যায়।
শাহরিয়ার আলম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদন আমরা বিশ্লেষণ করে দেখবো এতে আমলে নেয়ার কোনো বিষয় রয়েছে কি না। সামনে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের উচ্চ পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় সফর বিনিময় ও বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক রয়েছে। এগুলোতে আমরা প্রতিবেদনের ঘাটতিগুলো তুলে ধরবে, যাতে আগামী বছরের প্রতিবেদনে এই ঘাটতিগুলো না থাকে।