প্রায় পঞ্চাশ বছরের নিউইয়র্কে বাংলাদেশী কমিউনিটি প্রসঙ্গেঃ ডা. ফায়জুল কবীর

0
176

জন্মভূমি প্রতিবেদক : নিউইয়র্কে বাংলাদেশী কমিউনিটি গড়ে উঠেছে প্রায় পঞ্চাশ বছর। সত্তর দশকের মাঝামাঝি থেকে এর সূত্রপাত। স্বাধীন বাংলাদেশের হাতে গোনা ক’জন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, দার্শনিক প্রথম এদেশে আসলে বাংলাদেশী কমিউনিটি সময় ও বাস্তবতার তাগিদে গড়ে। এসব পেশাজীবী প্রবাসীর পাশাপাশি অবৈধভাবে আসা অপেশাদার শ্রমিকও এদেশে আসলে এই নিউইয়র্ক নগরীই হয়ে উঠে তাদের আবাস স্থল।
প্রবীণ প্রবাসীদের মাঝে ডা. ফায়জুল কবীর একজন। তরুন একজন ডাক্তার হিসেবে তিনি এদেশে আসেন। নিজকে প্রতিষ্ঠিত করতে একজন সফল দন্তচিকিৎসক হিসেবে এই নিউ ইয়র্কের কুইন্স-এর অফিসে থেকেই নিজের পেশার পাশাপাশি কমিউনিটি গড়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি।
তরুণ বয়সে ডা. ফায়জুল কবীরের মতো আরো অনেকে প্রবাসী হলেও দেশমাতৃকার মায়া মমতা ও আবেগের ব্যাকুলতার তাগিদেই একটি বাংলাদেশ কমিউনিটির স্বপ্ন দেখে।

দন্ত চিকিৎসক ডা. ফায়জুল কবীর সম্প্রতি সাপ্তাহিক জন্মভূমির এই প্রতিনিধির সাথে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, আজ কমিউনিটিও হয়েছে, আমাদের নতুন প্রজন্মের আমেরিকান বাংলাদেশীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করছে। এসব দেখতে মন ভরে যায়। কিন্তু ব্যর্থতার দিক হল নতুন প্রজন্মকে আমরা ‘বাঙ্গালীর ভাষা, কৃষি সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট করতে পারি নাই।’

তিনি বলেন প্রায় পঞ্চাশ বছরেই এই কমিউনিটিও দিকপ্রান্ত, প্রভৃত লক্ষ্যবস্তুতে আমরা এখন পৌঁছতে পারি নাই।
ডা. ফায়জুল কবীর বলেন, আজ তেকে অনেক বছর আগে আমরা যখন এদেশে এসে বসতি স্থাপন করি ঠিক এই সময়ের মাঝে ইউরোপ, এশিয়া বা আফ্রিকার অন্যান্য দেশ থেকে আসা আভিবাসীরা আমাদের চেয়ে অনেক বেশী অগ্রগামি। তিনি বলেন, এদেশের রাজনীতিতে আমাদের তেমন ভূমিকা নেই। অর্থনীতিতেও নড়বরে অবস্থা এবং সামাজিক অবস্থানেও আমরা অনেকাংশে ঘরমুখী। পাশাপাশি অন্যান্য কমিউনিটি আশাতীত এগিয়েছে।

ডা. ফায়জুল কবীর বলেন, এক সময় আমরা অফিসেও দেশপ্রেমেই একটি বাংলাদেশী কমিউনিটি গড়ার লক্ষ্যেই আশির দশক থেকেই কাজ করি। প্রথমত: লক্ষ্য ছিলো, একুশে ফেব্রুয়ারী, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস ও বাংলা নববর্ষ পালনের মাধ্যমে প্রবাসে বাংলাদেশীয় সংস্কৃতি ও ভাষাকে ধরে রাখা। তখন অনেক প্রতিকূলতার মাঝে আমরা শুরু করি। আমাদের সময়ের অনেকেই আজ নেই। আবার কেউ কেউ উৎসাহ হারিয়ে ঘরে বসে আছে।

তিনি বলেন, আজকের বাংলাদেশী কমিউনিটিতে এমন সব ঘটনা ঘটে তা খুবই বিচিত্র। কমিউনিটির নেতৃবৃন্দের পালাবদল বা পরিবর্দ্ধন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হলেও আজকের বাংলাদেশী কমিউনিটি সঠিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে বলা যাবে না। তবু আমি আশাবাদী ও তাতেই কমিউনিটি একদিন সঠিক রাস্তা পাবে, আমাদের নতুন প্রজন্ম এগিয়ে আসবে। উল্লেখ্য ডা. ফায়জুল কবীর এখন কমিউনিটির কর্মকান্ড থেকে অনেক দূরে আছেন।
ডা. ফায়জুল কবীর অনুতাপের সাথে বলেন, আমরা যখন এই কমিউনিটি গড়ার সাথে এগিয়ে যাই তখন ভাবতাম বাংলা সংস্কৃতি, আমাদের জীবনধারা, খাদ্য-মসলা এসব এদেশেমের মানুষের কাছে পরিচিত করবো নিজস্ব ধারা গড়ে উঠবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here