খাদ্যে কৃত্রিম রং নিষিদ্ধ করছে ট্রাম্প প্রশাসন

0
23
খাদ্যে কৃত্রিম রং নিষিদ্ধ করছে ট্রাম্প প্রশাসন
খাদ্যে কৃত্রিম রং নিষিদ্ধ করছে ট্রাম্প প্রশাসন

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা থেকে কৃত্রিম খাদ্য রং নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছে, একটি পদক্ষেপ যা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের স্বাগত এবং বর্তমান তীব্র বিভক্ত রাজনৈতিক পরিবেশে বিরল দ্বিদলীয় ঐকমত্যের ইঙ্গিত দেয়। খবর বাসসের।

ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, স্বাস্থ্য সচিব রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র ‘মেক আমেরিকা হেলদি অ্যাগেইন’ (এমএএইচএ) কর্মসূচির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ব্যবস্থা সংস্কারের অঙ্গীকার করেছেন। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ অনুমোদিত আটটি কৃত্রিম খাবার রঙ পর্যায়ক্রমে বন্ধ করে দেয়া হবে।

এই পদক্ষেপ সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময় নিষিদ্ধ করা রেড ডাই ৩-এর ওপর ভিত্তি করে আরও দ্রুত কার্যক্রম গ্রহণের পাশাপাশি শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে এসব উপাদানের প্রভাব নিয়ে জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটকে (এনআইএইচ) বিস্তৃত গবেষণা পরিচালনার নির্দেশ দেবে।

ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) কমিশনার মার্টি মাকারি শিশু ও পরিবার ঘেরা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘গত ৫০ বছরে আমেরিকান শিশুরা ক্রমাগত একটি বিষাক্ত রাসায়নিক পরিবেশে বেড়ে উঠছে।’ তিনি এডিএইচডি (মনোযোগ ঘাটতি ও অতিসক্রিয়তা ব্যাধি), ডায়াবেটিস, ক্যানসার, জেনেটিক গঠনে বিঘ্ন, হজমজনিত সমস্যা ইত্যাদির সঙ্গে এসব রঙের সম্পর্ক থাকার বিভিন্ন গবেষণার কথা উল্লেখ করেন।

পেট্রোলিয়াম থেকে তৈরি আটটি কৃত্রিম রঙের মধ্যে ইয়েলো ৫, ইয়েলো ৬ এবং রেড ৪০ সবচেয়ে বেশি ব্যবহƒত হয় বলে জানিয়েছেন ‘সেন্টার ফর সায়েন্স ইন দ্য পাবলিক ইন্টারেস্ট’ নামক অলাভজনক সংস্থার সভাপতি ও নির্বাহী পরিচালক পিটার লুরি।

এই রঙগুলো পানীয়, মিষ্টান্ন, সিরিয়াল, সস ও দুগ্ধজাত খাদ্যসহ নানা পণ্যে ব্যবহƒত হয়ে থাকে। রাজ্য পর্যায়েও এই উদ্যোগ জোর পাচ্ছে। মার্চ মাসে রিপাবলিকান প্রবণ পশ্চিম ভার্জিনিয়া কৃত্রিম রঙ নিষিদ্ধ করে আইন পাস করেছে। এর আগে ২০২৪ সালে ক্যালিফোর্নিয়া এই রঙগুলোকে পাবলিক স্কুলে নিষিদ্ধ করেছিল।

ক্যানসারের ঝুঁকির কারণে ২০২৭ ও ২০২৮ সালের মধ্যে খাদ্য ও ওষুধে রেড ডাই ৩ নিষিদ্ধের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে বাকি রঙগুলোও শিশুদের আচরণগত সমস্যার (যেমন- এডিএইচডি) সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে গবেষণায় দেখা গেছে। ইউরোপে এই রঙগুলো পুরোপুরি নিষিদ্ধ না হলেও সতর্কতামূলক লেবেল দেয়ার নিয়মের ফলে অনেক কোম্পানি প্রাকৃতিক বিকল্পে চলে গেছে।

কৃত্রিম রঙ নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে কেনেডির অবস্থান মূলধারার বৈজ্ঞানিক মতামতের সঙ্গে বিরলভাবে মিলছে, যা টিকাবিরোধী অবস্থান, সাম্প্রতিক হাম রুগ্ণতার গুরুত্ব খাটো করে দেখা এবং পাখিদের মধ্যে বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়তে দেয়ার মতো বিতর্কিত মতের পর এক ব্যতিক্রম।

তবে শিল্প খাতের কিছু বিরোধিতা দেখা যেতে পারে। ঐতিহাসিকভাবে খাদ্য প্রস্তুতকারকরা কড়াকড়ি নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে লবিং করে এসেছে। তবে লুরি মনে করেন, এবার হয়তো তাদের প্রতিক্রিয়া অনেকটা মৃদু হতে পারে। তিনি বলেন, ‘শিল্প খাত এখন ভাবছে, তারা কি এর বিরোধিতা করবে, না কি শেষ পর্যন্ত মেনে নেবে। আমার দেখা ইঙ্গিতগুলো বলছে, তারা হয়তো শেষ পর্যন্ত মেনে নেবে।’
তিনি রেড ডাই ৩ নিষিদ্ধ হওয়ার সময় দেয়া ‘উত্তাপহীন’ বিবৃতি এবং কেনেডির প্রথম হুঁশিয়ারিতে প্রায় নিঃপ্রতিক্রিয় শিল্প খাতের কথাও উল্লেখ করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here