দেশে সরকার পরির্বতনের পর আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট মামলা দেয়া হয়েছে :টেলিফোনে সাপ্তাহিক জন্মভূমিকে রানা দাশগুপ্ত

0
83

জন্মভূমি প্রতিবেদক : ঢাকা থেকে বাংলাদেশ হিন্দুবৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ রানা দাশগুপ্ত সাপ্তাহিক জন্মভূমিকে এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে বলেন, তিনি এই মুহূর্তে কোন ধরনের মন্তব্য করতে চান না। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পলায়নের পর সরকার পরিবর্তন হয়। নতুন সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে দু’টি মামলা চলছে। তাই এই মুহূর্তে তিনি রাজনৈতিক পরিবেশ নিয়ে কোন বক্তব্য করতে চান না।
রানা দাশগুপ্ত কথা প্রসঙ্গে বলেন, আমার বিরুদ্ধে দু’টি হত্যা মামলা ঝুলছে। একটি মামলার ঘটনা ১৯শে জুলাই ঢাকার যাত্রাবাড়ীর একটি হত্যার ঘটনা। আশ্চর্যের বিষয় সেদিন আমি বাংলাদেশেই ছিলাম না। নিজের চিকিৎসার জন্য ভারতের কলকাতায় ছিলাম। আমি চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি প্লেনে কলকাতা যাই।
অন্য মামলাটি ঢাকার মিরপুরের একটি হত্যার ঘটনা। ৫ই আগষ্ট সেই মামলায় পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আরও ৩৯২ জন আসামি আছে। আমি ৩৮২ নম্বর আসামি। মজার বিষয় সেদিনও ঢাকায় নয় আমি ছিলাম চট্টগ্রামে।
তিনি জানান, যেহেতু তিনি বানোয়াট হত্যা মামলার আসামি তাই দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কোন ধরনের মন্তব্য করতে চান না।
সাপ্তাহিক জন্মভূমির পক্ষ তার কাছে আমরা জানতে চাই, ঢাকা ও চট্টগ্রামে ইসকন মন্দিরের সাথে তাদের কোন যোগাযোগ আছে কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে রানা দাশগুপ্ত বলেন, আমরা হিন্দু,ঐক্য পরিষদ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার ও বৈষম্য নিয়ে কথা বলে। সুতরাং ইসকন সহ অন্যান্য মন্দিরের সাথে আমাদের আসা যাওয়া এবং যোগাযোগ থাকতেই পারে।
হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্তের কাছে যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদের তিন খন্ডে ক্ষত-বিক্ষত পরিস্থিতি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় ঐক্য পরিষদের মনোনীত একটি মাত্র ঐক্য পরিষদই নিউইয়র্কে আছে। সেই শাখার নেতৃত্বে আছেন এটর্নী অশোক কর্মকার। অন্য যাঁরা ঐক্য পরিষদের নামে কমিটি করছে সেটি তাদের নিজ দায়িত্বে। কেন্দ্রীয় ঐক্য পরিষদের সাথে কোন সম্পর্কও নেই অনুমোদনও নেই।
নিউইয়র্কে সম্প্রতি ঐক্য পরিষদের একটি নতুন কমিটি হয়েছে, এ বিষয়ে আপনি অবগত কিনা জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় নেতা রানা দাশগুপ্ত বলেন, একজন নিউইয়র্ক থেকে ফোনে আমাকে জানিয়েছে। শুনেছি চার-পাঁচজন মিলে নাকি জনৈক রিয়েল স্টেট ব্রোকারের বাড়ীতে বসে ডিনার খেতে খেতে একটি কমিটি করেছে! যাক, এ নিয়ে আমাদের কোন মাথাব্যথা নেই কারণ ওরা অনেক আগেই ঐক্য পরিষদ থেকে বহিষ্কৃত।
রানা দাশ গুপ্ত আরও জানান, তাদের কেন্দ্রীয় অনুমোদন প্রাপ্ত ঐক্য পরিষদের সাথে তাদের নিয়মিত সংলাপ ও যোগাযোগ আছে। সবশেষে তিনি সাপ্তাহিক জন্মভূমির পাঠকদের প্রতিও শুভেচ্ছা জানান। এবং মানবাধিকার প্রশ্নে বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের পাশে থাকার আহবান জানান।
এদিকে নিউইয়র্ক ঐক্য পরিষদের নবেন্দু-দ্বিজেন গ্রুপ একটি নতুন কমিটি ঘোষণা করে মাত্র ক’জন মিলে। সাপ্তাহিক জন্মভূমিতে এ বিষয়ে ক’মাস আগে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরই মাঝে খবর নিয়ে জানা যায়, সভাপতি পদ পেতে উন্মাদ প্রায় একজন ব্যক্তির জন্য নতুন কমিটি চুপিসারে করা হয়েছে। সাধারণ সভাকে উপেক্ষা করে এই নতুন কমিটি ১৫ই নভেম্বর অভিষেকের মাধ্যমে দায়িত্ব নেবে বলে জানা যায়।
নতুন কমিটির সভাপতি দ্বিজেন ভট্টাচার্য্য, সাধারণ সম্পাদক বিষ্ণু গোপ, চেয়ারম্যান নবেন্দু দত্ত, সদস্য সচিব চন্দন সেনগুপ্ত সহ কার্যকরী কমিটি। আরও দু’টি উপকমিটি অর্থাৎ বোর্ড অব ডিরেক্টর ও উপদেষ্টা পরিষদ মিলে দেড় শতাধিক সদস্য অভিসিক্ত হবেন।
এদিকে নতুন সভাপতি দ্বিজেন ভট্টাচার্যের সাথে ঘনিষ্ঠ একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাপ্তাহিক জন্মভূমির এই প্রতিনিধিকে জানান, সভাপতি দ্বিজেন ভট্টাচার্য ১৫০ জন বিশিষ্ট নতুন কমিটি সকল সদস্যদের জানিয়েছেন। তারা সাধারণ সভা করে কমিটি পাশ করতে ভয় পাচ্ছে তাই তথাকথিত কমিটির নামে ক’জন মিলে পদ-পদবী ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়।
নিউইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশ হিন্দু সম্প্রদায় দেশে চলমান অস্থির রাজনীতি, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার জুলুম সহ সনাতন ধর্মের মানুষজনের আন্দোলনের মুখে এবং ঢাকা চট্টগ্রামের থমথমে পরিস্থিতিতে নিউইয়র্ক ঐক্য পরিষদের নতুন কমিটি এবং এর প্রক্রিয়া নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করছে। যদিও নিউইয়র্ক প্রবাসী ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদ নিয়ে আস্থা একেবারেই তলানিতে!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here