পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানা হাটে সরকার নির্ধারিত বৈধ ইজারাদারকে ইজারা তুলতে বাধা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে বিএনপির কিছু নেতার বিরুদ্ধে।
উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক নাসির উদ্দীন তালুকদার নেতৃত্বে আটঘরের মাদক ব্যাবসায়ী, সন্ত্রাসী ও একাদিক মামলার আসামীদের নিয়ে ইজাদারের লোকজনকে ইজারা তুলতে বাধা দিচ্ছেন।
জানা গেছে, পাঁচ আগষ্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর আটঘরের কিছু মাদক ব্যাবসায়ী, সন্ত্রাসী ও একাদিক মামলার আসামী নেছারাবাদ উপজেলা বিএন পি নেতাদের কাছে আশ্রয় নিয়ে দ্রুত বিএনপির সক্রিয় সদস্য হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে। তাদের কর্মকান্ডের কারনে দলের সুনাম দিন দিন ক্ষুন্ন হচ্ছে এবং আটঘর -কুড়িয়ানা ইউনিয়ন সহ উপজেলার দুঃসময়ের নেতাকর্মীরা কোনঠাসা হয়ে পড়ছে।
তারা হাট থেকে ইজারাদারের লোকজনকে মেরে উঠিয়ে দিয়ে নিজেদের বাহিনী দিয়ে ইজারার টাকা তুলছেন। এ ঘটনায় ইজারাদার আব্দুর রহিম মিয়া, হুমাউন মোল্লা,নাসির উদ্দীন তালুকদার,রুহুল আমীন,জাকির হোসেন সহ মোট দশ জনের বিরুদ্ধে পিরোজপুর জেলা প্রশাসক বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে জানাগেছে, আটঘরের আব্দুর রহিম মল্লিক দীর্ঘদিন যাবত ওই হাটের ইজারা ক্রয়ের মাধ্যমে ইজারার টাকা তুলতেন। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমান ১৪৩২ বাংলা সনের আটঘর হাটের ইজারা পান আব্দুর রহিম। যাহার মূল্য একুশ লাখ একুশ হাজার দুইশত একুশ টাকা।
গত ১৪ এপ্রিল বাংলা সনের ১লা বৈশাখ (সোমবার) হাটে ইজারা আদায় করিতে গেলে সেখানকার
এক দল চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী টোল আদায় করিতে বাধা দিয়ে উঠিয়ে দেয়। এসময় ইজারাদার আব্দুর রহিমের সাথে থাকা লোকজনদের ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করে তাদের প্রান নাশের হুমকি দেন।
ইজারাদার আব্দুর রহিম অভিযোগ করেন, হাটের শিডিউল ক্রয়ের পূর্ব থেকে বিএনপি নেতা নাসির তালুকদার,হুমাউন মোল্লা,রুহুল আমীন সহ তাদের বাহীনি আমাকে হুমকি দিয়ে আসছিল। আমি তা উপেক্ষা করে শিডিউল ক্রয় করে হাটের সব্বোর্চ দাম দিয়ে ইজারা পেয়েছি। এখন হাটে ইজারা তুলতে আমাকে বাধা দেয়া হচ্ছে। বিএনপি নেতা নাসির তালুকদার চেয়েছিল অল্প টাকায় তার অনুগত কোন লোককে ইজারা পাইয়ে দিয়ে মোটা অংকের চাঁদা নিবেন। তিনি তা না পরায় হাট থেকে আমার লোকদের ইজারা তুলতে না দিয়ে হাটে নিজস্ব লোক বসিয়ে অবৈধ ইজারা তুলছেন।
স্বরূপকাঠি পৌর বিএনপির সদস্য সচিব কাজী কামাল বলন, ‘নেছারাবাদের আটঘরের হাট বৈধভাবে ইজারা হয়েছে। সেখানে সর্বোচ্চ দরদাতা ইজারা পেয়েছে। এখানে বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে কেহ কোন চাঁদাবাজি করতে যাবেনা। যদি কেহ করে থাকে তাহলে ব্যক্তির দায় দল নেবেনা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা নাসির উদ্দীন তালুকদার বলেন, আমি কাউকে ইজারা তুলতে বাধা দেয়নি। কেহ যদি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয় সামনে এসে বলুক। তিনি বলেন, দূর থেকে অনেকে অনেক কিছু করতে পারে। আমি নির্দোষ। হাটের সাথে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।
অভিযুক্ত হুমাউন মোল্লা বলেন, আব্দুর রহিমের কাছ থেকে নাসির তালুকদার পচিশ লাখ টাকায় ইজারা কিনি নিয়েছেন। তাই আমরা ইজারা নিচ্ছি।
নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, ‘হাট ইজারা দেয়ার পর প্রথম দিন একটু সমস্যা হয়েছিল। এরপর কোন অভিযোগ পাইনি। শুনেছি তারা ডিসি মহোদয়ের কাছে একটি অভিযোগ দিয়েছে। ডিসি স্যার কি ব্যবস্থা নেয় তা আমি এখনো জানতে পারিনি’।
পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মো. আশরাফুল আলম খান জানান, ‘আমি গত ১৬ এপ্রিল(বুধবার) বিষয়টি জানতে পেরেছি। বিষয়টি নেছারাবাদ ইউএনওকে দেখার জন্য ব্যবস্থা নিতে বলেছি’।